
“রূপনারানের কূলে” কবিতাটি কবির 'শেষলেখা' কাব্যের অন্তর্গত। এই কাব্যের কবিতাগুলি কবির মৃত্যুর কিছুকাল আগে রচিত হয়েছিল এবং তাঁর মৃত্যুর পরে 'শেষলেখা' নামে কাব্য আকারে প্রকাশিত হয়। কবি নিজে কোনো কবিতারই নামকরণ করে যান নি। কবিতাগুলি সংখ্যা দ্বারা চিহ্নিত ছিল। কবিতাটি শেষলেখা কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত এগারো সংখ্যক কবিতা।
রূপনারানের কূলে কবিতার প্রেক্ষাপট :
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত রূপনারানের কূলে কবিতাটি তাঁর শেষ জীবনের শেষলেখা কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। স্বাভাবিকভাবে যেহেতু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষ জীবনের লেখা সে কারণে তাঁর সমস্ত জীবনের দর্শন এই কবিতার মধ্যে ধরা পড়েছে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর সমস্ত জীবনকে যেভাবে দেখেছেন সেখান থেকে যে গভীর জীবন উপলব্ধি তিনি অর্জন করেছেন তাকে কেন্দ্র করে এই রূপনারানের কূলে কবিতাটি রচিত।
সুতরাং রূপনারানের কূলে কবিতাটির প্রেক্ষাপট রবীন্দ্র জীবনের বাস্তব দর্শন। রবীন্দ্রনাথ জীবনকে যেভাবে দেখেছেন বা যেভাবে চিনেছেন সেই প্রেক্ষাপটের উপর দাঁড়িয়ে তিনি এই উল্লেখযোগ্য রূপনারানের কূলে কবিতাটি রচনা করেছিলেন।
-----------------------------------------------------------------------
রূপনারানের কূলে
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
রূপ-নারানের কূলে
জেগে উঠিলাম,
জানিলাম এ জগৎ
স্বপ্ন নয়।
রক্তের অক্ষরে দেখিলাম
আপনার রূপ,
চিনিলাম আপনারে
আঘাতে আঘাতে
বেদনায় বেদনায়;
সত্য যে কঠিন,
কঠিনেরে ভালোবাসিলাম,
সে কখনো করে না বঞ্চনা।
আমৃত্যুর দুঃখের তপস্যা এ জীবন,
সত্যের দারুণ মূল্য লাভ করিবারে,
মৃত্যুতে সকল দেনা শোধ ক’রে দিতে।
জেগে উঠিলাম,
জানিলাম এ জগৎ
স্বপ্ন নয়।
রক্তের অক্ষরে দেখিলাম
আপনার রূপ,
চিনিলাম আপনারে
আঘাতে আঘাতে
বেদনায় বেদনায়;
সত্য যে কঠিন,
কঠিনেরে ভালোবাসিলাম,
সে কখনো করে না বঞ্চনা।
আমৃত্যুর দুঃখের তপস্যা এ জীবন,
সত্যের দারুণ মূল্য লাভ করিবারে,
মৃত্যুতে সকল দেনা শোধ ক’রে দিতে।
★★★★★★